ঢাকা , শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যোগাযোগ 01714455681

শাহজাদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: আহত অন্তত ২৫, সাংবাদিকের ওপর হামলা।

মো: সবুজ হোসেন রাজা,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য গোলাম সরোয়ার তার অনুসারীদের নিয়ে দুপুর ১টার দিকে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে যান। তবে অফিসে ঢোকার সময় সিরাজগঞ্জ-২ ও সিরাজগঞ্জ-৬ বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ড. এমএ মুহিতের অনুসারীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। গোলাম সরোয়ার ও তার অনুসারীরা দৌড়ে গিয়ে পৌরশহরের দাবারিয়া গ্রামে অবস্থান নেন।

গোলাম সরোয়ারের দাবি, হামলায় তার অনুসারী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমানসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী শাকিক ও ছাত্রদল নেতা হুমায়ুন কবীর পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, গোলাম সরোয়ার অতীতে কমিটি দেয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কমিটি দেননি। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল।

সংঘর্ষের সময় ঘটনাটি মোবাইলে ধারণ করার চেষ্টা করলে শাহজাদপুর সাংবাদিক ফোরামের কোষাধ্যক্ষ ও দি ডেইলি স্কাই পত্রিকার প্রতিনিধি সেলিম তালুকদারের ওপর হামলা করা হয় এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সংঘর্ষের পর গোলাম সরোয়ার বিকেলে তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন যে, ড. এমএ মুহিতের নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন। অন্যদিকে, বিকেলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোলাম সরোয়ার দীর্ঘ ১৭ বছর তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। হঠাৎ আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।

শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসলাম আলী বলেন, এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে, পাশাপাশি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাহজাদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: আহত অন্তত ২৫, সাংবাদিকের ওপর হামলা।

আপডেট সময় ০৬:২৯:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মো: সবুজ হোসেন রাজা,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য গোলাম সরোয়ার তার অনুসারীদের নিয়ে দুপুর ১টার দিকে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে যান। তবে অফিসে ঢোকার সময় সিরাজগঞ্জ-২ ও সিরাজগঞ্জ-৬ বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ড. এমএ মুহিতের অনুসারীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। গোলাম সরোয়ার ও তার অনুসারীরা দৌড়ে গিয়ে পৌরশহরের দাবারিয়া গ্রামে অবস্থান নেন।

গোলাম সরোয়ারের দাবি, হামলায় তার অনুসারী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমানসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী শাকিক ও ছাত্রদল নেতা হুমায়ুন কবীর পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, গোলাম সরোয়ার অতীতে কমিটি দেয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কমিটি দেননি। ফলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল।

সংঘর্ষের সময় ঘটনাটি মোবাইলে ধারণ করার চেষ্টা করলে শাহজাদপুর সাংবাদিক ফোরামের কোষাধ্যক্ষ ও দি ডেইলি স্কাই পত্রিকার প্রতিনিধি সেলিম তালুকদারের ওপর হামলা করা হয় এবং তার মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সংঘর্ষের পর গোলাম সরোয়ার বিকেলে তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন যে, ড. এমএ মুহিতের নির্দেশে তার অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন। অন্যদিকে, বিকেলে উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গোলাম সরোয়ার দীর্ঘ ১৭ বছর তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। হঠাৎ আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।

শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসলাম আলী বলেন, এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে, পাশাপাশি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।