ঢাকা ১২:১৮:৩৭ এএম, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
আমতলীতে মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে ধর্মীয় নেতাদেও সাথে ওয়ার্ল্ড ভিশন ও এনএসএস এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সি ইউ সির পক্ষ থেকে ঈদবস্ত্র বিতরন সিইউসি স্কুলের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ক্লাস পরিদর্শন করেন রহমত আলী কুড়িগ্রামে অসহায় দুঃস্থ ও ছিন্নমূলদের মাঝে ইফতার বিতরণ চীনা প্রতিনিধি দলের কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন মান্দা উপজেলা প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত স্বল্প আয়ের ২০০ জনের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শেষ গাড়ির যাত্রী ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে নওগাঁয় ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা নওগাঁয় ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত
নোটিশ :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যোগাযোগ 01714455681

শাহজাদপুরে এক রিকশাচালকের মেয়ের মেডিকেলের স্বপ্নপূরণ

সবুজ হোসেন রাজা সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:

দারিদ্র্যকে হার মানিয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাদলা গ্রামের চাঁদনী খাতুন। তাঁর বাবা চাঁদ আলী একজন রিকশাচালক, আর মা স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড় চাঁদনী শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

শৈশবে পড়াশোনার প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে চাঁদনী পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে ওঠেন। কাকিলামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পান। এরপর পোতাজিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি অর্জন করেন। পরে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে শাহজাদপুর সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শুরু করেন।

সংসারের অভাব-অনটনের কারণে বাবা-মা কাজে বাইরে থাকলে চাঁদনীকেই ছোট ভাই-বোনের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হতো। পাশাপাশি তিনি অবসরে হস্তশিল্প তৈরিতেও পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তবে দারিদ্র্য কখনও তাঁর স্বপ্নকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।

চাঁদনীর বাবা চাঁদ আলী জানান, রিকশা চালিয়ে পরিবারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হতো, ফলে মেয়ের পড়াশোনার জন্য বাড়তি উৎসাহ দিতে পারেননি। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্নভাবে তাঁকে সহযোগিতা করেছেন, যা চাঁদনীকে এগিয়ে যেতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

চাঁদনী বলেন, আমরা গরিব, তাই বুঝি দারিদ্র্যের কারণে ভালো চিকিৎসা পাওয়া কত কঠিন। সেই কষ্ট থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখি, যেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। কিন্তু মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ চালানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

চাঁদনীর মেডিকেলে চান্স পাওয়ার খবরে যেমন তাঁর পরিবার আনন্দিত, তেমনি তাদের সামনে নতুন দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে—মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে বহন করবেন? ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর টিউশন ফি, বইপত্র ও অন্যান্য খরচ চালানো তাঁদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চাঁদনী ও তাঁর পরিবার এখন সমাজের সহৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তার প্রত্যাশায় রয়েছেন, যেন দারিদ্র্যের বাধা পেরিয়ে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে পারেন এবং একদিন অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।
শাহজাদপুরের সহৃদয়বান ব্যক্তিবর্গ অনুগ্রহ করে সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন এবং এই মেধার বিকাশে সাহায্য করুন।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আমতলীতে মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে ধর্মীয় নেতাদেও সাথে ওয়ার্ল্ড ভিশন ও এনএসএস এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

শাহজাদপুরে এক রিকশাচালকের মেয়ের মেডিকেলের স্বপ্নপূরণ

আপডেট সময় ০৭:১৬:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সবুজ হোসেন রাজা সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:

দারিদ্র্যকে হার মানিয়ে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মাদলা গ্রামের চাঁদনী খাতুন। তাঁর বাবা চাঁদ আলী একজন রিকশাচালক, আর মা স্থানীয় একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড় চাঁদনী শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

শৈশবে পড়াশোনার প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকলেও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে চাঁদনী পড়াশোনায় মনোযোগী হয়ে ওঠেন। কাকিলামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পান। এরপর পোতাজিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি অর্জন করেন। পরে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে শাহজাদপুর সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শুরু করেন।

সংসারের অভাব-অনটনের কারণে বাবা-মা কাজে বাইরে থাকলে চাঁদনীকেই ছোট ভাই-বোনের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হতো। পাশাপাশি তিনি অবসরে হস্তশিল্প তৈরিতেও পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তবে দারিদ্র্য কখনও তাঁর স্বপ্নকে থামিয়ে রাখতে পারেনি।

চাঁদনীর বাবা চাঁদ আলী জানান, রিকশা চালিয়ে পরিবারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হতো, ফলে মেয়ের পড়াশোনার জন্য বাড়তি উৎসাহ দিতে পারেননি। তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্নভাবে তাঁকে সহযোগিতা করেছেন, যা চাঁদনীকে এগিয়ে যেতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

চাঁদনী বলেন, আমরা গরিব, তাই বুঝি দারিদ্র্যের কারণে ভালো চিকিৎসা পাওয়া কত কঠিন। সেই কষ্ট থেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখি, যেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। কিন্তু মেডিকেলে পড়াশোনার খরচ চালানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

চাঁদনীর মেডিকেলে চান্স পাওয়ার খবরে যেমন তাঁর পরিবার আনন্দিত, তেমনি তাদের সামনে নতুন দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে—মেয়ের পড়াশোনার খরচ কীভাবে বহন করবেন? ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর টিউশন ফি, বইপত্র ও অন্যান্য খরচ চালানো তাঁদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চাঁদনী ও তাঁর পরিবার এখন সমাজের সহৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তার প্রত্যাশায় রয়েছেন, যেন দারিদ্র্যের বাধা পেরিয়ে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে পারেন এবং একদিন অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।
শাহজাদপুরের সহৃদয়বান ব্যক্তিবর্গ অনুগ্রহ করে সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন এবং এই মেধার বিকাশে সাহায্য করুন।